টেকনাফে লবণ উৎপাদনে মাঠে নেমেছে চাষীরা

হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ > সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে ধান কাটা শেষ হতে না হতেই পুরোদমে শুরু হয়েছে লবণ চাষীদের কর্মযজ্ঞ। লবণ উৎপাদনে মাঠে নেমেছেন ১ হাজার ৮৫৭ জন লবণ চাষী। টেকনাফে বর্তমানে আগের উৎপাদিত লবণ বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা। প্রতিমণ লবন উৎপাদন করতে স্থানীয় পর্যায়ে খরচ পড়ে প্রায় দেড়শ টাকা। লবণের মুল্য আশানুরুপ থাকার ফলে লবন উৎপাদনে চাষীরা দ্বিগুণ উৎসাহে মাঠে নেমেছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের কাটাখালী, লম্বাবিল, উনছিপ্রাং, কাঞ্জরপাড়া, নয়াপাড়া, নয়াবাজার, মিনাবাজার, ওয়াব্রাং, সিকদারপাড়া, সুলিশপাড়া, নাটমুরাপাড়া, চৌধুরী পাড়া, রঙ্গিখালী, লেদা, মোছনী পাড়া, জাদীমুরা, টেকনাফ সদরের চৌধুরীপাড়া, মৌলভীপাড়া, সাবরাং ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া, সিকদারপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, নয়াপাড়া এবং বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালীসহ অন্যান্য এলাকায় পুরোদমে লবণ চাষীগণ কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে। অনেকেই খতমে কোরআনের মাধ্যমে লবণ চাষের কাজ উদ্বোধন করেছেন। ইতিমধ্যে অনেক এলাকা থেকে শ্রমিকগণ কোদাল, কলসী, ডেকসি, সামান্য বিচানা পত্রসহ অন্যান্য আনুসাঙ্গিক জিনিষপত্র নিয়ে মাঠে নেমেছে। সব জায়গায় লবণের চাষাবাদ শুরু হয়েছে।
হ্নীলা সিকদার পাড়ার লবণ চাষী দেলোয়ার হোসেন জানান, আগে নায্য মূল্যের অভাবে বিগত মৌসুমের লবণগুলো গুদাম জাত হয়ে পড়ে থাকত। বর্তমানে দাম আশানুরুপ হওয়ার পাশাপাশি উৎপাদিত লবণও গুদামে পড়ে থাকেনা। আমরা আশা করছি এ বছরে লবণের ভাল আরও দাম পাবো।
নয়াবাজার এলাকার লবণ চাষী নুরুল আলম জানান, লবণ চাষীদের সরকারীভাবে ঋণের পৃষ্টপোষকতা করলে ও সঠিক মূল্য নির্ধারণ করে দিলে এ খাতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে। শাহপরীরদ্বীপের বেড়ীবাঁধ সমস্যার কারণে প্রায় ২ হাজার একর লবণ মাঠে প্রবল জোয়ারে ডুবে যায়।
বিসিক টেকনাফ লবণ কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান জানান, চলতি লবণ মৌসুমে টেকনাফ উপজেলায় ৪ হাজার ৫০৭ একর জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে। ১ হাজার ৮৫৭ জন প্রান্তিক লবণ চাষী মাঠে কাজ করছেন। ইতিমধ্যেই সাবরাং ও শাহপরীরদ্বীপে ৭৫০ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। বিগত মৌসুমে টেকনাফ উপজেলায় লবণ উৎপাদন হয়েছিল ১ লক্ষ ৮০ হাজার ৯৩০ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশী। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চলতি মৌসুমেও লবণের বাম্পার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ##